শনি এমনিতেই পূর্বজন্মের অন্যতম কারক গ্রহ। আবার দ্বাদশ ভাব বিচারে দ্বাদশ ভাব হচ্ছে অন্যতম পূর্বজন্মের কারক স্থান। তাই কারও জন্মকুণ্ডলীতে দ্বাদশভাবে শনি থাকা মানেই বোঝায়, গত জন্মে এমন কিছু করা হয়েছিল তার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এই জন্মে।
প্রকৃতিদেবী তাকে খুব সহজে ছাড়বে না।এই হচ্ছে সেই অবস্থান যেখান থেকে বোঝায়, জাতক/জাতিকা গত জন্মে ভয়ঙ্কর দুঃখ ভোগ করতে বাধ্য হয়েছিল, প্রকৃত বিরুদ্ধ এমন কোনও কাজ তারা করেছিল তার জন্যে তাকে গত জন্মে অনূশোচনা করতে হয়েছিল, তাদের নিজের ভিতর অপরাধবোধ কাজ করেছিল,
পাপবোধ তাদের দগ্ধে ছিল, অনেক দুঃখকষ্ট স্বীকার করতে হয়েছিল এবং এই জন্মে সেই রেসের অনেকটা বা কিছুটা নিয়ে আবার তাদেরকে জন্মাতে হয়েছে বাকি ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দিতে। তাই শনির এই অবস্থান মোটেই ভাল নয়।
তাই এই জন্মে ভ্রূণ হিসেবে মাতৃজঠরে দ্বাদশভাবের জাতক/জাতিকা যখন জন্মগ্রহণ করতে চলেছে তখন তাকে অনেক কৃচ্ছ, কষ্টভোগ, স্বল্পতা ও নানা বাধানিষেধ অতিক্রম করে জন্মাতে হবে।
সে যে নতুন পরিবারে জন্ম নেবে সেখানে আগে থেকে নানান কষ্ট ও আর্থিক বিড়ম্বনা বিরাজ করছে, সেখানে নানা ধরনের দায়িত্ববোধ সেই পরিবারের লোকদের আগে থেকেই বহন করে আসতে হচ্ছিল। সেখানে জন্মের পর সত্যিকারের সে রকম সুখ সে ভাবে পাবে না। অনেক ক্ষেত্রে এই অবস্থায় বহু শিশু তার মায়ের বুকের দুধ পর্যন্ত পায় না।
পূর্বজন্মের কি বিশাল কর্মভোগ, ভাবলে শিউরে উঠতে হয়!এই বার দ্বাদশভাবের জাতক/জাতিকা যখন এই জন্মে আসবেন, তার শিশু ও ভ্রূণ অবস্থার ছবি উপরেই দেখানো হয়ছে।
জাতক/জাতিকাকে পূর্বজন্মের কারণেই এই জন্মে থেকে থেকে অনেক বাধাবিঘ্নের মধ্য দিয়ে, অনেক ত্যাগ ও তিতিক্ষা স্বীকার করে, আর্থিক কৃচ্ছতার মধ্য দিয়ে ছোটবেলা, কৈশোরকাল ও যৌবনের অনেকটা অতিক্রম করতে হবে। বার বার মনে হবে, কী দোষে আমাকে এমন কষ্টভোগ করতে হচ্ছে।
যেখানে সে জন্মায়, দেখে সেখানে সবাই মুখ বুঝে কষ্ট করে চলেছে, নানা দায়িত্ব সেই বাড়ির লোকেরা বহন করে চলেছে। সেখানে প্রেম, ভালবাসা, রোমান্স বলে কিছু নেই। সবাই কর্তব্য করে চলেছে, দায়িত্ব পালন করে চলেছে। সেখানে যদিও বা সুখ বা আরাম থাকে তা বহু কষ্টের বিনিময়ে পেতে হয়।
দ্বাদশে যাদের শনি থাকে তারা বয়সকালে প্রবল ঘুমের সমস্যায় ভোগে। যত বয়স বাড়তে থাকে, মেলামেশার চেয়ে এরা বিচ্ছিন্ন ভাবে একাকিত্বকেই এক সময় আপন করে নেয়।সমস্ত দ্বাদশভাবের জাতক/জাতিকা খুব কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে জীবন গড়ে তোলে।
এরা দায়িত্ব পালনে পটু, তাই যেখানে দায়িত্ববোধ আছে, সেই ধরনের কাজে এরা নাম কেনে, কর্মস্থানে এদের বিশ্বাস করে, এরা যে কোনও কাজের মধ্যে নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে থাকে। এরা খুব কষ্ট করে উপার্জন করে।